ঘরের অবস্থাটা একটু অগোছালো, জামাকাপড়, বইপত্র অযত্নে এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। ছেলেদের ঘর যেমন হয় আর কি! অনীকের ঘর এটা। ছেলেটা বরাবরই বেলা করে ঘুম থেকে ওঠে। সেই জন্য অবশ্য বাবার কাছে কম গালমন্দ শুনতে হয় না। মা অবশ্য সর্বদাই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার বৃথা চেষ্টা করতে থাকেন।
তবে আজ অনীকটা যেন বড্ড দেরি করছে উঠতে। মায়ের মন টা উশখুস করছে, “নাহ! এবার ছেলেটাকে কড়া ভাবে শাসন করতে হবে”।
অনীকের বাবার মনটাও আজ সকাল থেকেই বেশ উত্তাল। আদরের ছেলেটাকে সব ব্যাপারে কাজের খোঁটা দিতে কি আর ওনার ও ভালো লাগে! তবে কি বা করবেন উনি, পুরোনো কলিগদের, বন্ধুদের, আত্মীয়দের ছেলে পুলে দের চাকরি হয়ে গেলো, আর ছোটো থেকেই মেধাবি অনীক কিনা আজও বেকারের তকমা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নাহ! অনেক বেলা হল,কই! আজ ছেলেটাকে একবারও তো দেখলেন না। অন্যদিন তো সকাল থেকেই খবরের কাগজ নেবার জন্য সামনে ঘুরঘুর করে।
অনীকের ঘরের মেঝে হাত দুয়েক ওপরে অনীকের ঝুলন্ত পা দুটো দেখা যাচ্ছে। দড়ির চাপটা গলায় বেশি মাত্রায় পড়ায়, জিভটা বেশ খানিকটা বেরিয়ে এসেছে। ছোটবেলা থেকে বহু প্রশংসিত চোখ টাও কোটর থেকে ঠিকরে বেরিয়ে আসছে। লেখার সখটা অনীকের অনেকদিন থেকেই, তবে বাবা-মা র উদ্দেশে লেখা শেষ চিঠিটায় বেশি কিছু লেখার প্রয়োজন বোধ করেনি অনীক।
“চললাম, তোমাদের এই বেকার, কুলাঙ্গার ছেলের জন্য চোখের জল ফেলো না”।
বাড়ির বাইরে এতো লোকজন আর পুলিশের ভিড় দেখে বেশ ঘাবড়ে গেলো কানু পিওন। খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে হাবভাব বোঝার চেষ্টা করলো সে। সব বুঝে কোনরকমে ধীর পায়ে লেটার বক্সের কাছে গিয়ে চাকরির জয়েনিং লেটারটা ফেলে ওখান থেকে কেটে পড়ল। কি আর করবে,কাল তালেগোলে এই চিঠিটা আর দেওয়া হয়ে ওঠেনি তার।
কাহিনী : শাশ্বতী
vison valo laglo.ami eta jodi narrate
kori kono asubidha nei toh mam..